জুয়েলারী জগতে আলোচনার কেদ্রবিন্দুতে “ডায়মন্ড সিটি” কেবিন ক্রূ/ ফ্লাইট স্টুয়ার্ড নেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (ছেলেমেয়ে উভয়ই) বিনা অভিজ্ঞতায় “কেবিন ক্রু” পদে লোক নিবে নভো এয়ারলাইন্স, যোগ্যতা HSC, আবেদন করতে পারবে ছেলে মেয়ে উভয়ই। অচেনা নায়ক ! Unseen Hero !! কেবিন ক্রু নিয়োগ দেবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ,যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক ,আবেদন করতে পারবে ছেলে মেয়ে উভয়ই বিনা অভিজ্ঞতায় “কেবিন ক্রু” পদে চাকরি, যোগ্যতা HSC পাশ, বেতন ৮০০০০ টাকা ইউএস-বাংলার বহরে নতুন বোয়িং যুক্ত ‘চাকরির হতাশায়’ ঢাবি গ্রাজুয়েটের আত্মহত্যা ! নতুন ৫ টিভি চ্যানেলের অনুমোদন , মিডিয়াতে কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ জবস এওয়ানের এক যুগ পূর্তি
ঢাকা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, স্থানীয় সময়: ০৮:৩৪:৪৭

‘শিল্প শহর’ হবে মিরসরাই

| ২৭ অগ্রহায়ন ১৪২২ | Friday, December 11, 2015

দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের উপকূলীয় এলাকা ইছাখালী এখন ধু-ধু চর। ফেনী নদীর বুকে জেগে ওঠা প্রায় ৫০ হাজার একর চরে গিয়ে দৃষ্টিসীমা যত দূর যাবে, দেখা যাবে জনমানবশূন্য। চারদিকে বালি আর বালি। সেখান থেকে সাত হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠবে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। প্রতিষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ ও আধুনিক এক পরিকল্পিত শিল্প শহর। এমন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। ঢাকা থেকে ২১৫ কিলোমিটার আর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে পরিকল্পিত শিল্প শহরটি গড়ে উঠলে চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার মিরসরাই হবে দেশের অর্থনীতির ‘হাব’। কর্মসংস্থানে দেখা দেবে নতুন দিগন্ত। বদলে যাবে পুরো চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। ধু-ধু চরে খুলে যাবে সম্ভাবনার দুয়ার। বেজার কর্মকর্তারা জানান, ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গভর্নিং বোর্ডের সভায় চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোট সাত হাজার একর জমির ওপর গড়ে উঠবে কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল।

প্রাথমিকভাবে ৫৫০ একর জমির ওপর প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ বেশ এগিয়েছে। ৫৫০ একর জমিতে এখন চলছে ভূমি উন্নয়ন, এলাকায় যাওয়ার জন্য সড়ক নির্মাণ, সুপেয় পানির সরবরাহ ও বাঁধ নির্মাণের কাজ। ফেনী নদী থেকে জেগে ওঠার কারণে সেখানকার জমি অনেক নিচু। তাই ভূমি উঁচু করতে এখন সেখানে ফেলা হচ্ছে মাটি। ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ওই মাটি ফেলা হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে পানির কারণে চর ডুবে না যায়, তার সুরক্ষার জন্য চলছে বাঁধ নির্মাণের কাজ। একই সঙ্গে চলছে পানি সরবরাহ এবং সড়ক নির্মাণের কাজ। জানতে চাইলে বেজার যুগ্ম সচিব হারুনুর রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, মিরসরাইকে শিল্পনগরীতে রূপান্তর করতে একটি সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান নেওয়া হচ্ছে। একজন নাগরিকের জন্য সেখানে সব ধরনের সুবিধা থাকবে। শিল্প-কারখানা, স্কুল, আবাসিক ভবন, মসজিদ, হাসপাতালসহ সব ধরনের সুবিধা রাখা হবে। হারুনুর রশীদ বলেন, মিরসরাইতে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির ভিত্তিতে (পিপিপি)। যেখানে সরকার জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন করে দেবে। এরই মধ্যে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভূমি উন্নয়ন আর সুরক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। আর সরকারের সেই জমিতে প্লট নির্মাণ, সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও বর্জ্য নিরসনের ব্যবস্থা করবে নির্বাচিত ডেভেলপার। দরপত্রে অংশ নিয়ে যিনি এক নম্বর হবেন, তিনিই ওই কাজের জন্য বিবেচিত হবেন। ৫০ বছরের জন্য সরকারের কাছ থেকে জমি লিজ নেবে ডেভেলপার। জমি লিজ নেওয়ার পর ওই অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি শিল্পোদ্যোক্তা আনবে নির্বাচিত ডেভেলপার। আগামী বছর ১৮ জানুয়ারি দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন উল্লেখ করে হারুনুর রশীদ বলেন, সবার দরপত্র মূল্যায়ন করার পর ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচিত কম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হবে। এদিকে মিরসরাইয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের সঠিকভাবে দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করতে এবং মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পর্কে সবাইকে ধারণা দিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে একটি প্রি-বিড মিটিং আয়োজন করে বেজা কর্তৃপক্ষ। সেখানে সভাপতিত্ব করেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ১১টি ডেভেলপার কম্পানি মিরসরাইতে ৫৫০ একর জমির অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য দরপত্র কেনে। এদের মধ্যে রয়েছে-শিহাব করপোরেট হাউস লিমিটেড, আবদুল মোনেম লিমিটেড, এনা করপোরেশন, সামিট অ্যাসেট লিমিটেড, কাঞ্চন গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, দিপন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিস লিমিটেড, জেসমিন লিমিটেড, বেস্ট হোল্ডিং লিমিটেড, ফিনলে টি এবং এনার্জি প্যাক জেনারেশন লিমিটেড। তবে আরো কয়েকটি কম্পানি দরপত্রে অংশ নেবে বলে জানান বেজার কর্মকর্তারা। বেজার একাধিক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, মিরসরাইতে বিনিয়োগ করতে দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত আগ্রহী। কারণ, সেখান থেকে চট্টগ্রাম শহর, বন্দর ও বিমানবন্দর তুলনামূলক কাছে। তাই বন্দর দিয়ে পণ্য বিদেশে পাঠানো যাবে খুব সহজে।

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী কালের কণ্ঠকে বলেন, আগামী ১৫ বছরে দেশে ১০০টি আন্তর্জাতিক মানের অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। একই সঙ্গে ৪০ বিলিয়ন ডলার পণ্যের রপ্তানি হবে। সে ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে সবচেয়ে বড়। যেখানে একটি শিল্পনগরী গড়ে উঠবে বলে জানান তিনি। বেজার কর্মকর্তারা বলছেন, মিরসরাইতে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি এমন জায়গায় করা হচ্ছে, যেটি ঢাকা-চট্টগ্রামের মহাসড়কের পাশে। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর কাছাকাছি হওয়ায় মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাঁচামাল, শ্রমের সহজলভ্যতা এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সেখানে পোশাক ও বস্ত্রশিল্প, অটোমোবাইল ও পার্টস ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প গড়ে তোলা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।

সূত্র : কালের কন্ঠ